Header Ads

কাশফুল

কাশফুল 


কাশফুল
 , বাংলার শরৎ ঋতুর এক চিরন্তন প্রতীক, যা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অনন্য অভিব্যক্তি। এই শুভ্র ফুলগুলো নদীর তীর, মাঠ, প্রান্তর ও জলাশয়ের ধারে মিষ্টি বাতাসে দোল খায়, যেন প্রকৃতির শুভ্রতায় ভরা এক পরিপূর্ণতা। শরতের শুরুতেই কাশফুলের শোভা ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে, মেঘমুক্ত আকাশের নিচে সাদা তুলোর মতো মেঘের খেলা আর দোলায়িত কাশফুলের স্নিগ্ধতা যেন মনকে গভীর প্রশান্তিতে ভরিয়ে তোলে। 

শহরের ব্যস্ত ইট-পাথরের মাঝে যখন কাশফুলের শুভ্রতা ফুটে ওঠে, তখন সেই দৃশ্য যেন এক ভিন্ন রকমের আনন্দের অনুভূতি জাগিয়ে তোলে। গ্রামবাংলার সরল জীবনের সাথে কাশফুলের এক নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে; নদীর তীরে বা গ্রামের খোলা প্রান্তরে কাশফুলের দোলায় যেন সহজ-সরল জীবনের সৌন্দর্য প্রতিফলিত হয়। শহরের মাঝেও পরিত্যক্ত খোলা জায়গাগুলোতে কাশফুলের সাদায় মোড়া পরিবেশ সবাইকে এক মুহূর্তের জন্য হলেও প্রকৃতির সান্নিধ্যে নিয়ে যায়।




কাশফুলের এই শুভ্রতা আমাদের মনে করিয়ে দেয় শরতের নীরব অথচ সজীব সৌন্দর্যকে। গ্রামের কিশোরদের ঘুড়ি ওড়ানোর সাথী হয়ে কিংবা নদীর ধারে বসে জ্যেষ্ঠদের স্মৃতিমাখা মুহূর্তের সাক্ষী হয়ে কাশফুল সব বয়সের মানুষের মনে এক অদ্ভুত প্রশান্তি এনে দেয়। শরতের মৃদু বাতাসে কাশফুলের নরম দোলায় যেমন প্রকৃতির ছোঁয়া অনুভূত হয়, তেমনি মানুষের মনেও স্নিগ্ধতার স্পর্শ এনে দেয়।

শহরের যারা ব্যস্ততার ফাঁকে শরতের কাশফুল দেখতে চান, তারা গাছের ছায়ায় বসে বা উন্মুক্ত জলাশয়ের পাশে কাশফুলের মধ্যে নিজেকে হারিয়ে ফেলতে পারেন। মেঘমুক্ত আকাশে ভেসে থাকা তুলার মতো সাদা মেঘের মাঝে কাশফুলের নরম দোলা আমাদেরকে মনে করিয়ে দেয় প্রকৃতির স্নিগ্ধতা ও শান্তির কথা। কাশফুলের শুভ্র ছোঁয়ায় শরতের অনাবিল আনন্দের সুর যেন মনকে ভরিয়ে তোলে। 




এভাবে কাশফুল শুধু প্রকৃতির সৌন্দর্য নয়, বরং আমাদের জীবনের এক নীরব আনন্দের উৎস হয়ে উঠে। প্রকৃতির এই স্নিগ্ধ উপহার সবার মনকে কাব্যিক করে তোলে, যেন শরতের কাশফুলে ভরা মাঠ আর নদীর তীরে বসে একটুখানি সময় প্রকৃতির সঙ্গে মিশে যেতে পারে। কাশফুলের এই সাদামাটা অথচ মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্য আমাদের প্রতিদিনের জীবনে একটুকরো প্রশান্তির ঝলক এনে দেয়, যা আমাদের হৃদয়কে অনাবিল আনন্দে পূর্ণ করে তোলে।

লিখেছেন 
মুহাম্মদ সানাউল্লাহ চাটগামী।
কবি ও সাহিত্যিক

No comments

Powered by Blogger.